মোনায়েম মন্ডল, গাইবান্ধা থেকে
প্রেমের জালে জড়িয়ে বিয়ের প্রলোভনে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ। থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের। হাসপাতাল থেকে মেডিকেল না করেই ভিকটিমকে সুকৌশলে ফেরৎ এনে ধর্ষণের আলামত নষ্টের চেষ্টা। ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলার হবিবুল্লাপুর গ্রামে।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, উক্ত গ্ৰামের জাহিদুল ইসলামের কলেজ পড়ুয়া কন্যার সাথে প্রতিবেশী সেরাজুল ইসলামের পুত্র জোহা শেখ (২০) এর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জোহা শেখ তাকে বিয়ে করবে বলে প্রলোভন দিয়ে আসছিল। এমতাবস্থায় গত ২৩ মে/২০২০ ইং তারিখে সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে বিয়ের ব্যাপারে কথাবার্তা বলার জন্য দরজা খুলে রাখতে বলে। সে তার শয়ন ঘরের দরজা খুলে রাখলে জোহা ওই রাতেই আনুমানিক ১১ টার দিকে ঘরে ঢুকে বিয়ে সহ প্রেমালাপের এক পর্যায়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করে। ভিকটিমের আত্নচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে ঘটনা প্রত্যক্ষ করে।
এ ব্যাপারে গত ৮ জুন/২০২০ ইং তারিখে সাদুল্যাপুর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ( সংশোধনী- ০৩ ) আইনের ৯(১) ধারায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ০৫ ।
এদিকে, উল্লেখিত ভিকটিম কলেজ ছাত্রীর পিতা জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন- ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হলে সংশ্লিষ্ট থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইমরান খান ভিকটিমকে মেডিকেল করানোর জন্য গাইবান্ধা আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সাদুল্যাপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদ প্রামাণিকের নির্দেশে বনগ্ৰাম ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার জুয়েল মিয়া ও সাদুল্যাপুরের জনৈক হেলাল মিয়াকে পাঠিয়ে বিয়ে পড়ানোর কথা বলে সুকৌশলে ভিকটিমকে মেডিকেল না করেই ফেরৎ নিয়ে আসে। শুধু তাই নয়, সুকৌশলে হাসপাতালে ভিকটিম নিজেই মেডিকেল করবে না বলে মুচলেকা লিখে নিয়েছে বলে জানায়। কিন্তু ভিকটিমকে ফেরৎ নিয়ে আসার পর থেকেই শুরু হয়েছে তালবাহানা। বর্তমানে ধর্ষক জোহা পলাতক রয়েছে। ইতোমধ্যে তিন সপ্তাহ গত হলেও বিয়ে না হওয়ায় ভিলেজ পলিটিক্স এর শিকার অসহায় জাহিদুল ইসলাম প্রতারিত হয়ে বিচারের আশায় সংশ্লিষ্টদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
এ ব্যাপারে ভাইস-চেয়ারম্যান মাসুদ প্রামাণিক এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন- আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। ধর্ষণ মামলা দায়ের হলে ভিকটিমকে মেডিকেল করানোর নিয়ম, আমি কেন মেডিকেল করাতে নিষেধ করবো ? শুনেছি- ভিকটিম নিজেই মেডিকেল করতে চায়নি, তাই ওসি সাহেবের সাথে পরামর্শ করে মুচলেকা লিখে দিয়ে তারা ভিকটিমকে ফেরৎ নিয়ে গেছে। শুনেছিলাম- মিমাংসা হয়েছে, বিয়ে হবে। কিন্তু কয়েকদিন ধরে শুনছি- ছেলে নাকি পালিয়েছে!
জুয়েল মেম্বারও তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন- ভিকটিমকে নিয়ে মেডিকেল করতে গেলেও ভিকটিম নিজেই নাকি মেডিকেল করায় নি, পরে মুচলেকা লিখে দিয়ে ফিরে এসেছে।